তাড়াশ উপজেলা সিরাজগঞ্জ জেলা সদর হতে প্রায় ৪০ কিঃ মিঃ পশ্চিমে ঐতিহাসিক চলনবিলের মধ্যে অবস্থিত। তাড়াশ উপজেলার নমাকরণের বিষয়ে সর্বজনগ্রাহ্য কোন ঐতিহাসিক তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে পুরাতন বই-পুস্ত্তক ও প্রচলিত কাহিনী থেকে নামকরণের দুটি তথ্য পাওয়া যায়। তাড়াশ উপজেলাটি একসময় গহীন জঙ্গলে পরিপূর্ণ ছিল। প্রচলিত লোক কাহিনী থেকে জানা যায়, বোনাই নগর ফরিদপুরের জমিদার বনমালী রায় বাহাদুর নৌ ভ্রমণে আসার পথে তাড়াশ ও কহিতের মাঝামাঝি স্থানে একটি গাভীকে সাঁতার কেটে আসতে দেখেন। রায় বাহাদুর সাহেবের কৌতুহল জাগে, ‘‘প্রায় দুই কিলোমিটার পথ পার হয়ে গাভিটি কি কারণে জঙ্গলে প্রবেশ করছে?’’। জঙ্গলে বাঘ থাকাটা অস্বাভাবিক নয়। তিনি গাভিটিকে অনুসরণ করার নির্দেশ দেন। গাভিটিকে অনুসরণ করার পর দেখা যায়, গাভিটি বনের মাঝামাঝি একটি উঁচু জায়গায় তার বাট থেকে দুধ ঝেড়ে দিচ্ছে। রাজার কৌতুহল আরো বেড়ে যায়। পরে তিনি দেখতে পান, দুধ ঝেড়ে দেওয়ার জায়গায় কয়েকটি ফাটল আছে। ফাটল থেকে কিছু মাটি সরানোর পর একটি শিবলিঙ্গ দেখা যায়। এমন বিস্ময়কর ঘটনা দেখে রায় বাহাদুর স্থানটিকে পূণ্যস্থান মনে করে সেখানে শিবলিঙ্গ স্থাপণ করেন এবং জঙ্গল পরিষ্কার করে অত্র এলাকায় একটি রাজ বাড়ী স্থাপণ করেন যার নির্দশন এখনও আছে। রায় বাহাদুর সাহেবের মায়ের নাম ভবানী, যার নামানুসারে তাড়াশের ১৫ কিলোমিটার উত্তরে ভবানীপুর নাম করণ করা হয় এবং মা ভবানীর মন্দির স্থাপন করা হয়। রায় বাহাদুরের মেয়ের নাম ছিল তারা দেবী। অনেকে মনে করেন, জমিদারের মেয়ের নাম তারা থেকে তারাশ, পরবর্তীতে তাড়াশ নামের উৎপত্তি। নামকরণের বিষয়ে দ্বিতীয় মতটি হলোঃ জঙ্গলে পরিপূর্ণ তাড়াশে এক সময় বাঘ, ভাল্লুক এবং ডাকাতদের ত্রাসের রাজত্ব ছিল। সে কারণে ত্রাস থেকে তারাশ বা তাড়াশ নামের উৎপত্তি।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস